
অনেকে চান ভবিষ্যতে বিমন চালক হবেন কিন্তু আপনি কিভাবে বিমান চালক হবেন জানেন কি এখন অনেকেই তা জানেন না । অনেকের ইচ্ছা থাকে ভবিষ্যতে পাইলট হওয়ার।বিমান চালনা একটি সম্মানজনক ও চ্যালেঞ্জিং পেশা। পাইলট হওয়ার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, ফ্লাইট ট্রেনিং, শারীরিক ও মানসিক দক্ষতা এবং লাইসেন্সিং প্রয়োজন। আপনি যদি একবার পাইলট হতে পারেন তাহলে আপনার জীবন উজ্জ্বল হবে। চল এবার তাহলে জানা যাক কিভাবে আপনি পাইলট হবেন।
আপনি কিভাবে বিমান চালক হবেন ?
১.পাইলট হওয়ার প্রাথমিক যোগ্যতা
শিক্ষাগত যোগ্যতা
এসএসসি/এইচএসসি (বিজ্ঞান বিভাগ) অর্থাৎ পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও গণিত বিষয়ে ভালো জ্ঞান থাকা আবশ্যক। আর বাংলাদেশে সাধারণত এইচএসসি পাশ করা প্রয়োজন, তবে কিছু ফ্লাইট স্কুল এসএসসি পরেও ভর্তি নেয়। স্নাতক ডিগ্রি (ঐচ্ছিক) অর্থাৎ অনেক এয়ারলাইন্স স্নাতক ডিগ্রিধারী প্রার্থীকে অগ্রাধিকার দেয়। বিমানচালনায় ডিগ্রি Aviation, Aeronautics, Aerospace Engineering থাকলে সুবিধা হয়। আপনি কিভাবে বিমান চালক হবেন যদি আপনি এই বিষয় গুলো অবশ্যই গুরুত্ব দিবেন।
বয়স ও শারীরিক সুস্থতা
একজন বিমানে চালকের বয়স সাধারণত ১৭-৩২ বছর (ক্যাডেট পাইলট প্রোগ্রামের জন্য)। শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকতে হবে চোখের দৃষ্টিশক্তি ৬/৬ বা করেকশনসহ সঠিক থাকতে হবে (কিছু ক্ষেত্রে কন্টাক্ট লেন্স অনুমোদিত)। Color Vision সঠিক থাকতে হবে। উচ্চতা সাধারণত ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি থেকে ৬ ফুট ৫ ইঞ্চির মধ্যে (যা এয়ারলাইনের উপর নির্ভরশীল)। কোনো গুরুতর শারীরিক বা মানসিক রোগ থাকা যাবে না।
২.পাইলট হওয়ার পথ (ক্যারিয়ার অপশন)
কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স (CPL) প্রাপ্তি অর্থাৎ বিমান চালক হতে CPL (Commercial Pilot License) অর্জন করতে হবে। এটি দুইভাবে করা যায়:
১.ক্যাডেট পাইলট প্রোগ্রাম (এয়ারলাইন্স স্পন্সরড)
বাংলাদেশ বিমান, নভোএয়ার, ইউএস-বাংলা, বেসরকারি এয়ারলাইন্স বা সামরিক বাহিনী (বিমান বাহিনী) ক্যাডেট পাইলট নিয়োগ দেয়। এর প্রক্রিয়া হলো
- লিখিত পরীক্ষা (পদার্থবিজ্ঞান, গণিত, ইংরেজি)
- সাইকোমেট্রিক টেস্ট (মানসিক দক্ষতা যাচাই)
- মেডিকেল টেস্ট (Class-1 মেডিকেল সার্টিফিকেট)
- ভাইভা (ইন্টারভিউ)
- সিলেক্টেড ক্যান্ডিডেটরা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট স্কুলে ট্রেনিং পায়।
প্রাইভেট ফ্লাইট স্কুলে ট্রেনিং
বাংলাদেশ বা বিদেশে (যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফিলিপাইন, অস্ট্রেলিয়া) CPL কোর্স করা যায়। প্রধান ফ্লাইট স্কুল (বাংলাদেশ):** বাংলাদেশ ফ্লাইং একাডেমী (BFA), CAAB-অনুমোদিত। অ্যারোনটিক্যাল ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (AIB)। খরচ প্রায় ৩০-৫০ লক্ষ টাকা (বিদেশে বেশি)।
২.সামরিক পাইলট (বিমান বাহিনী)
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগ দিয়ে পাইলট হওয়া যায়। যার যোগ্যতা হলো
- এইচএসসি/স্নাতক (বিজ্ঞান বিভাগ)
- বয়স ১৬.৫-২১ বছর (এসএসসি পর)
- শারীরিক ও মানসিকভাবে ফিট
- প্রিলিমিনারি টেস্ট → ISSB → মেডিকেল → ফাইনাল সিলেকশন
- ট্রেনিং বাংলাদেশ বা বিদেশে হয় (প্রায় ৩-৪ বছর)

৩. পাইলট ট্রেনিং ও লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া
স্টুডেন্ট পাইলট লাইসেন্স
- মেডিকেল টেস্ট পাস করে SPL নিতে হয়
- প্রাথমিক ফ্লাইট ট্রেনিং শুরু
প্রাইভেট পাইলট লাইসেন্স (PPL)
- ৪০-৫০ ঘণ্টা ফ্লাইং (সিঙ্গল ইঞ্জিন বিমান)
- নেভিগেশন, টেক-অফ, ল্যান্ডিং, ইমার্জেন্সি হ্যান্ডলিং শেখা
কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স (CPL)
- ২০০+ ঘণ্টা ফ্লাইং (ইনস্ট্রুমেন্ট রেটিং সহ)
- নাইট ফ্লাইং, ক্রস-কান্ট্রি ফ্লাইট, মাল্টি-ইঞ্জিন ট্রেনিং
উপসংহার
আপনি কিভাবে বিমান চালক হবেন , আপনি যদি উপরে আলোচিত বিষয় গুলো ভালো ভাবে বুজে আজ থেকে প্রতিশ্রুতি নিয়ে থাকেন তাহলে আপনিও একদিন পাইলট হবেন।পাইলট হওয়ার জন্য দৃঢ় ইচ্ছা, আর্থিক সক্ষমতা ও কঠোর পরিশ্রম প্রয়োজন। সঠিক ফ্লাইট স্কুল বাছাই, মেডিকেল ফিটনেস এবং লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া সঠিকভাবে শেষ করতে হবে। বাংলাদেশে বিমান বাহিনী বা বেসরকারি এয়ারলাইন্সে যোগ দেওয়া যেতে পারে, অথবা বিদেশে ট্রেনিং নিয়ে গ্লোবাল ক্যারিয়ার গড়া সম্ভব।