Iran Israel war
ইরান ও ইসরাইলের (Iran Israel war)মধ্যে সংঘর্ষ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম জটিল ও দীর্ঘস্থায়ী সংকট। এই দ্বন্দ্বের পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও ভূরাজনৈতিক কারণ, যা কয়েক দশক বছর ধরে তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই সংঘর্ষ নতুন মাত্রা পেয়েছে, বিশেষ করে ২০২৩-২০২৪ সালে ইরানের সরাসরি হামলার মাধ্যমে। এই নিবন্ধে ইরান-ইসরাইল সংঘর্ষের মূল কারণ, ঐতিহাসিক পটভূমি, সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ এবং ভবিষ্যত সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করা হবে।
ইরান-ইসরাইল সংঘর্ষের(Iran Israel war) মূল কারণ
- ইসরাইলের প্রতিষ্ঠা ও ফিলিস্তিন ইস্যু
- ইসরাইলের প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের মাধ্যমে, যেখানে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডকে আরব আর ইহুদিদের মধ্যে ভাগ করা হয়। আরবদের বিরোধিতা আর যুদ্ধের ফলে লাখো ফিলিস্তিনি শরণার্থী হয়। ফিলিস্তিন ইস্যু মূলত ভূমির অধিকার, শরণার্থী প্রত্যাবর্তন আর জেরুজালেমকে কেন্দ্র করে দীর্ঘমেয়াদি সংঘাত সৃষ্টি করেছে, যা আজও অমীমাংসিত রয়েছে
- প্রক্সি যুদ্ধ ও আঞ্চলিক প্রভাব
- প্রক্সি যুদ্ধ ইরান-ইসরাইল সংঘর্ষে বড় ভূমিকা রাখে। ইরান হিজবুল্লাহ, হামাস ও অন্যান্য গোষ্ঠীকে সমর্থন দেয়, আর ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদের সহায়তা পায়। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। অঞ্চলজুড়ে অস্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা হুমকি ও মানবিক বিপর্যয় প্রকট হয়ে উঠছে, যা বিশ্ব রাজনীতিকেও প্রভাবিত করে।
- পরমাণু অস্ত্র ইস্যু
- ইরান দাবি করে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ, তবে ইসরাইল একে অস্তিত্বের হুমকি মনে করে এবং প্রতিরোধে সামরিক ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেয়।ইজরায়েল সন্দেহ করে ইরান গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে , যা তাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি ।
- ১৯৭৯ সালের ইরানি বিপ্লব
- ১৭৭৯ সালে আমেরিকান বিপ্লব জোরদার হয়। ফ্রান্স ও স্পেন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে যুদ্ধে নামে। সাভানাহ অভিযানে ব্যর্থতা সত্ত্বেও নৌযুদ্ধে জন পল জোনস সফল হন। এই সময় বিপ্লব আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং ব্রিটেনের চাপ বাড়ে।আবার নতুন করে বিদ্রোহ শুরু হয় ।
সাম্প্রতিক সংঘর্ষ (২০২৩-২০২৪)
- হামাস-ইসরাইল যুদ্ধ (Iran Israel war)
- ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরাইলের ওপর আকস্মিক হামলা চালায়, ১২০০ মানুষ নিহত ও বহু অপহরণ হয়। ইসরাইল গাজায় পাল্টা আক্রমণ চালায়, হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়। যুদ্ধটি ভয়াবহ মানবিক সংকট সৃষ্টি করে। আন্তর্জাতিক চাপেও যুদ্ধ থামেনি, তবে কয়েক দফা সাময়িক যুদ্ধবিরতি হয়।
- ইরানের সরাসরি হামলা (২০২৪)
- ইসরাইলের পাল্টা হামলা
- ইরানের সরাসরি হামলার জবাবে ২০২৫ সালে ইসরাইল পাল্টা আক্রমণ চালায়। তারা ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায়, বিশেষ করে কেন্দ্রীফিউজ ও রাডার ঘাঁটিতে আঘাত হানে। প্রায় ৫০টি যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে হামলা চালানো হয়, যা ইরানে কৌশলগত ক্ষতি ঘটায়।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
- যুক্তরাষ্ট্র ও ট্রাম্প ইরানকে নির্দেশ দেন সেই সাথে ইসরাইলে সমর্থনও প্রকাশ করেন তো যুক্তরাষ্ট্র সরকারি হস্তক্ষেপ এখনো অনিশ্চিত
- আরব লিগ যুদ্ধ বিরোধী ও সক্রিয় মুসলিম বিশ্ব সংহতি আদান-প্রদানে OIC দুই রাষ্ট্র সমাধান চায়
- রাশিয়া স্থিতিশীলতা আকাঙ্ক্ষা করে ,চিন শান্তি কুপন ও আন্তর্জাতিক আলোচনার পক্ষে অবস্থান নিয়ে সমঝোতা চায়
ভবিষ্যত সম্ভাবনা
- ইরান ইসরাইল সংঘর্ষে হিজবুল্লাহ, হুথি ও অন্যান্য গোষ্ঠী জড়িয়ে পড়লে যুদ্ধ বিস্তৃত হতে পারে।
- মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা তেলের দাম ও সরবরাহে প্রভাব ফেলবে, বৈশ্বিক বাজারে অনিশ্চয়তা বাড়াবে।
- যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় শান্তি আলোচনা শুরু হতে পারে—যদি উভয় পক্ষ নমনীয় হয়।উপসংহার
ইরান-ইসরাইল সংঘর্ষ ক্রমেই জটিল ও বিপজ্জনক আকার ধারণ করছে। সরাসরি হামলা, প্রক্সি গোষ্ঠীর সম্পৃক্ততা এবং পারমাণবিক উদ্বেগ পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলছে। এই সংকট কেবল দুই দেশের নয়, পুরো মধ্যপ্রাচ্য ও বিশ্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। শান্তিপূর্ণ সমাধানে কূটনৈতিক উদ্যোগ ও আন্তর্জাতিক সংহতি এখন সবচেয়ে প্রয়োজনীয় ও জরুরি।
ট্রামপের ভাবনা
ইরান-ইজরায়েল সংঘর্ষ (iran israel war) এই দুই ভূখণ্ডের মধ্যে যুদ্ধ হলে মানবিক সংকট দেখা দেবে।গাজা ও লেবাননে চলমান সংঘর্ষে জন্য ইতিমধ্যে হাজারো বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। যুদ্ধ বিস্তৃত হলে এই সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়তে দেখাযাবে। যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলি ইজরায়েলের পক্ষে, অন্যদিকে ইরান-রাশিয়া-চীন সহ আরও শক্তিশালী হতে পারে যা বিশাল যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।
২০২৫ সালের ইরান-ইজরায়েল সংঘর্ষ নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প যে মন্তব্য করেছেন মন্তব্য করে থাকেন, সেটি এখনো পর্যন্ত জনসমক্ষে খুব পরিষ্কারভাবে প্রকাশিত হয়নি। ট্রাম্প ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে একটি শান্তি চুক্তির সম্ভাবনা উল্লেখ করেছেন। যেমনটি তিনি অতীতে ভারত-পাকিস্তান বা সার্বিয়া-কসোভোর ক্ষেত্রে করেছিলেন । ট্রাম্প ইরানকে স্পষ্ট ভবে বলেন, তারা তাঁর প্রস্তাবিত পারমাণবিক চুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছে যা সংঘাতকে তীব্র ভবে নিয়ে যাবে। তিনি ইরানকে “তেহরান খালি করতে” আহ্বান জানান।